বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০০ অপরাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক : ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের রাজেন্দ্রপুর এলাকায় ট্রাকের চাপায় নিহত দুই ভাইবোনের জন্য কেঁদে কেঁদে দোয়া করলেন কেরানীগঞ্জের হাজারো মানুষ। মঙ্গলবার (২৯ জানুয়ারি) কেরানীগঞ্জের কসমোপলিটন ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে বেলা সাড়ে ১১টায় শিশুদের স্মরণে শোকসভা ও মিলাদ মাহফিল হয়। এই স্কুলেরই শিক্ষার্থী ছিল নিহত আফিফা আক্তার ও আফসার আহমেদ। আফিফা পঞ্চম শ্রেণিতে, আফসার তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ত।
মিলাদে নিহত দুই শিশুর বাবা শামসুল আলম, বিভিন্ন স্কুল–কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ তিন সহস্রাধিক মানুষ অংশ নেন। এ সময় তাঁরা কালো ব্যাজ ধারণ করেন। উত্তোলন করেন শোক পতাকা। প্রতিটি মানুষের চোখ ছিল অশ্রুসিক্ত।
মিলাদে উপস্থিত ছিলেন কসমোপলিটন ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সামিউল্লাহ, কামুচাংশা স্কুলের প্রধান শিক্ষক কানিজ ফাতেমা, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ জামানসহ এলাকার বিশিষ্টজনেরা।
এ সময় মো. শাহ জামান বলেন, ‘গতকাল যে শিশু দুটি নিহত হয়েছে, তাদের মতো আমারও দুটি সন্তান আছে। একই ক্লাসে পড়ে। আমিও আতঙ্কে থাকি—কখন তারা নিরাপদে বাড়ি ফিরবে। আমিও চাই সড়ক নিরাপদ হোক।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিআরটিএ কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করব, যোগ্যতার ভিত্তিতে যেন ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হয়। যানবাহনের ফিটনেস যেন যাচাই–বাছাই করে দেওয়া হয়।’
ওসি বলেন, ‘পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো মামলা এখনো হয়নি। আমরা পরিবারকে তাগিদ দিচ্ছি হত্যা মামলা দায়েরের জন্য। চালক ও চালকের সহকারীকে আটকের চেষ্টা চলছে।’
কানিজ ফাতেমা বলেন, ‘আর কত লাশ হলে আমরা নিরাপদ সড়ক পাব। প্রতিদিন ১০-১২ জন করে নিহত হচ্ছেন। আমরা এর আগেও আন্দোলন করেছি। আজ পর্যন্ত তার সুফল পাইনি। আমরা নিরাপদে সড়কে চলতে চাই।’
এর আগে সকাল ১০টার দিকে কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় শোক র্যালি করেন হাজারো মানুষ। আগামী বৃহস্পতিবার এই এলাকায় মানববন্ধনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ, সোমবার (২৮ জানুয়ারি) ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে বেলা ১১টার দিকে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে ট্রাকের চাপায় মোটরসাইকেল আরোহী দুই ভাইবোন নিহত হয়। তারা কেরানীগঞ্জের কসমোপলিটন ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী ছিল। ঘটনার প্রতিবাদে ওই স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ঢাকা-মাওয়া মহাসড়ক ৪০ মিনিট অবরোধ করে রাখে।